✯ ✯ ✯ কুরআনের গানিতিক বিস্ময় ✯ ✯ ✯
১। আরবীতে “বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” লিখতে ঠিক
১৯
টা হরফ লাগে ।
২। পবিত্র কুরআন শরীফে মোট
১১৪টি সূরা আছে । ১১৪
সংখ্যাটি ১৯
দিয়ে বিভাজ্য (১১৪=১৯x৬)।
৩। প্রথম যে সূরাটি (সূরা আলাক)
নাযিল হয় তার অবস্থান শেষের
দিক
থেকে ১৯ তম।
৪। প্রথম যে পাঁচটি আয়াত
(সূরা আলাকের) নাযিল হয়
তাতে ঠিক
১৯ টি শব্দ আছে।
৫। সূরা আলাকে মোট আয়াত
আছে ১৯টি।
আর এই ১৯ আয়াতে আছে মোট
২৮৫টি শব্দ
যা কিনা বিস্ময়করভাবে ১৯
দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায়
(২৮৫=১৯x১৫)।
৬। নাযিলকৃত দ্বিতীয় সূরাটির
(সূরা আল-কালাম, কুরআনে অবস্থান
৬৮তম) শব্দসংখ্যা ৩৮(১৯x২)টি।
৭। নাযিলকৃত তৃতীয় সূরাটির
(সূরা আল-
মুজাম্মিল, পবিত্র কুরআন
শরীফে অবস্থান ৭৩তম)
শব্দসংখ্যা ৫৭(১৯x৩)টি।
৮। আবার সব শেষে নাযিল
হওয়া ‘সূরা আন-নাসর’ এ আছে মোট
১৯টি শব্দ। আর এই সূরার প্রথম
আয়াতে (মহান আল্লাহ্ পাক উনার
কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে এই
আয়াতে) আছে ঠিক ১৯টি হরফ।
৯। পবিত্র কুরআন শরীফে ‘আল্লাহ্’
নাম
মুবারক উল্লেখ করা হয়েছে মোট
১৩৩
বার
যা কিনা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য
(১৩৩=১৯x৭)।
১০- পবিত্র কুরআন শরীফে মোট
তিরিশটি পূর্ণসংখ্যার উল্লেখ
আছে যাদের যোগফল ১৯
দিয়ে বিভাজ্য।
1 +2 +3 +4 +5 +6 +7 +8 +9 +10 +11 +
12 +19 +20 +30 +40 +50 +60 +70 +80
+
99 +100 +200 +300 +1000 +2000 +
3000
+5000 +50000 +100000 =162,146 (19
x
8534)
১১। আর দশমিক ভগ্নাংশ আছে মোট
৮টি 1/10, 1/8, 1/6, 1/5, 1/4, 1/3, 1/2
এবং 2/3. তাহলে পবিত্র কুরআন
শরীফে মোট ৩৮ টি সংখ্যার
উল্ল্যেখ
আছে (৩৮=১৯x২)।
১২। ১১৩টি সূরার
আগে “বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম” আছে । শুধুমাত্র সূরা আত-
তাওবা এর আগে “বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” নেই । আর
সূরা আন-
নামল এর
আগে আছে “বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” দুইবার
তাহলে কুরআনে “বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” আছে মোট
১১৪(১৯
x৬) বার। সূরা আত- তাওবা কে প্রথম
ধরে যদি গুনে গুনে পরবর্তী সূরার
দিকে যেতে থাকেন
তবে সূরা আন-নামল
পাবেন ঠিক ১৯তম স্থানে! আরও একটু
অবাক হওয়া যাক, ১৯ এর গুনিতক-তম
সূরার আয়াতগুলির
(“বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” সহ) যোগফলও ১৯
এর গুনিতক মানে ১৯
দিয়ে বিভাজ্য!
পবিত্র কুরআন শরীফে সূরার অবস্থান
আয়াত সংখ্যা
১৯x১= ১৯তম সূরা ৯৯
১৯x২= ৩৮তম সূরা ৮৯
১৯x৩= ৫৭তম সূরা ৩০
১৯x৪= ৭৬তম সূরা ৩২
১৯x৫= ৯৫তম সূরা ৯
১৯x৬= ১১৪তম সূরা ৭
=২৬৬(১৯x৪)
১৩। প্রথম দিক থেকে হিসেব
করে যেতে থাকলে ১৯ আয়াত
সম্বলিত
প্রথম সূরা হচ্ছে সূরা আল- ইনফিতার।
এই সুরাটির শেষ শব্দ হল ‘আল্লাহ্’।
আপনি যদি শেষের দিক
হতে আল্লাহ্
শব্দটি গুনে গুনে আসতে থাকেন
তাহলে সূরা আল-ইনফিতারের
শেষের
‘আল্লাহ্’ শব্দের অবস্থান হবে একদম
ঠিক ১৯তম স্থানে!
১৪। ৫০ এবং ৪২তম সূরার প্রত্যেকেই
শুরু হয়েছে কাফ দিয়ে। অবাক হবেন
সূরা দুটির প্রত্যেকটিতে মোট
কাফের
সংখ্যা(৫৭=১৯ x৩) সমান। আবার ৫০তম
সূরায় আয়াত আছে ৪৫টি, যোগ করুন
৫০+৪৫= ৯৫(১৯ x৫)। একইভাবে ৪২তম
সূরায় আয়াত আছে ৫৩টি, ৪২+৫৩=
৯৫(১৯ x৫)।
৫০তম সূরা ৫৭(১৯ x৩) বার কাফ ৪২তম
সূরা ৫৭(১৯ x৩) বার কাফ ৫০তম
সূরা ৪৫টি আয়াত ৫০+৪৫= ৯৫(১৯ x৫)
৪২তম সূরা ৫৩টি আয়াত ৪২+৫৩= ৯৫(১৯
x৫) আবার পুরো কুরআন শরীফে কাফ
হরফটি আছে মোট ৭৯৮ বার
যা কিনা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য
এবং ভাগফল হয় ৪২ – আর দেখতেই
পেয়েছি যে ৪২ তম সুরাটি শুরুও
হয়েছে কাফ দিয়ে । শুধু কাফ
না ‘নুন’
হরফটির ক্ষেত্রেও এরকম বেপার
আছে।
যেমন নুন দিয়ে যে সূরাটি শুরু
হয়েছে তাতে নুনের মোট
সংখ্যাও(১৩৩)
১৯ দিয়ে বিভাজ্য (১৩৩= ১৯x৭)।
সূরা আত-তাওবা কে প্রথম
ধরে যদি গুনে গুনে পরবর্তী সূরার
দিকে যেতে থাকেন
তবে সূরা আন-নামল
পাবেন ঠিক ১৯তম স্থানে! পবিত্র
কুরআন শরীফে সূরা আল-
মুদ্দাসিরের ৩০
নম্বর আয়াতে চ্যালেঞ্জ
করে বলা আছে “There are nineteen in
charge of it.” (Qur’an, 74:30) ।
অর্থাৎ ১৯ সংখ্যাটি এর
দায়িত্তে আছে। অর্থাৎ কেউ
ইচ্ছা করলেই কুরআনকে বিকৃত
করতে পারবে না। ১৯ এর বেপার
গুলো হিসেব করলেই সব বের
হয়ে আসবে এটাকে কেউ বিকৃত
করেছে কিনা!
যারা কোরআন নিয়ে সন্দেহ
প্রকাশ
করে তাদের জন্য এই তথ্যই যথেষ্ট
যা বুঝার বুঝে নেওয়ার।
ইনশাআল্লাহ মহাশক্তিধর আল্লাহ্
পাক
তিনি নিজেই যে এর রক্ষক, কেউ
চাইলেই সেটার মর্যাদা বিনষ্ট
করতে পারবে না।
কোরআনে অনেক জায়গায়ই একের সংগে
অন্যের তুলনা উপস্থিত করা হয়েছে। এ তুলনা
উপস্থিত করার ব্যাপারে একটি অবিশ্বাস্য মিল লক্ষ্য
করা গেছে এবং তা হচ্ছে – সে দুটি নাম অথবা
বস্তুকে আল্লাহ তায়ালা তার কিতাবে সমান সংখ্যাতেই
উল্লেখ করেছেন। যেমন কোরআন
শরীফে সূরা ‘আলে ইমরান’ – এর ৫৯ নম্বর
আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন , ‘আল্লাহ তায়ালার
কাছে ঈসার তুলনা হচ্ছে আদমের মতো।’
এটা যে সত্য তা আমরা বুঝতে পারি । কারণ, এদের
কারোরই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জন্ম হয়নি। আদম (আ.)
এর মাতাও ছিলো না, পিতাও ছিলো না এবং ঈসা (আ.)
এর ও পিতা ছিলোনা। এখন এই তুলনাটি যে কত সত্য
তার প্রমান পাওয়া যায় যখন আমরা কোরআন
শরীফে এ দুটি নামের মোট সংখ্যা অনুসন্ধান করি।
দেখা যাচ্ছে, কোরআন শরীফে ঈসা (আ.) এর
নামটি যেমন পঁচিশ বার এসেছে , তেমনি আদম
(আ.) এর নামটিও এসেছে পঁচিশ বার।
কোরআনের বাণীগুলো যে মানুষের নয় তা
বোঝা যায় এদুটি নামের সংখ্যার সমতা দেখে।
আল্লাহ তায়ালা যেহেতু বলেছেন , এ দুটো
একই রকম। তাই সেগুলোর সংখ্যা গণনাও ঠিক একই
রকম রাখা হয়েছে।
এ তুলনার ক্ষেত্রে আরেকটি অলৌকিক বিষয়
হলো, যেখানে তুলনাটি অসম সেখানে সংখ্যা
দুটিকেও অসম রাখা হয়েছে। যেমন,
কোরআনে বলা হয়েছে , ‘সুদ’ এবং ‘বাণিজ্য’
এক নয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ শব্দ দুটির একটি
কোরআনে এসেছে ছয় বার এবং অন্যটি
এসেছে সাত বার।
বলা হয়েছে , জান্নাতের অধিবাসী আর
জাহান্নামের অধিবাসী সমান নয়’। জান্নাতের সংখ্যা
হচ্ছে আট আর জাহান্নামের সংখ্যা হচ্চে সাত। কিন্তু
‘জান্নাত’ ও ’জাহান্নাম’ শব্দ দুটো কিন্ত একই রকম
এসেছে, মোট ৭৭ বার করে ।
ঠিক তেমনি ভাবে ‘কাজ’ এর পরিনাম হচ্ছে ‘বিনিময়’ ,
তাই দুটো শব্দ এসেছে ১০৭ বার করে ।
কাউকে ভালোবাসলে তার আনুগত্য করা যায়, তাই
এ দুটো শব্দও কোরআনে সমান সংখ্যক অর্থাৎ
৮৩ বার করে উল্লেখ করা হয়েছে।
‘নারী ও পুরুষ’ – যে আল্লাহ তায়ালার কাছে সমান তা
কোরআনে এই শব্দ দুটোর সমান সংখ্যা
থেকেই আমরা বুঝতে পারি। কোরআনে এ
দুটো শব্দ এসেছে ২৪ বার করে । আরেকটি
অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, নর নারীর সম্মিলিত ‘এগ’ ও
‘স্পারম’ দিয়ে মানব শিশুর যে ক্রোমোজম তৈরী
হয় সে বিষয়টি, এর মোট সংখ্যা ৪৬। (২৩ নারী আর
২৩ নর মিলে এর সংখ্যা হয় ৪৬)
সূরা ‘আরাফ’- এ, এক আয়াতে আছে ‘যারা আমার
স্পষ্ট আয়াত সমূহ অস্বীকার করে তাদের উদাহরণ
হচ্ছে কুকুরের মত’। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে
যেতে হয় যখন আমরা দেখি , ‘যারা আমার সুস্পষ্ট
আয়াতকে অস্বীকার করে’ এ বাক্যটি
কোরআনে সর্বমোট পাঁচবার এসেছে ।
যেহেতু তাদের উদাহরণ দেয়া হয়েছে
কুকুরের সাথে , তাই সমগ্র কোরআনে ‘আল
কালব’ তথা কুকুর শব্দটাও এসেছে পাঁচবার ।
‘সাবয়া সামাওয়াত’ কথটির অর্থ হলো ‘সাত আসমান’ ।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোরআনে এ ‘সাত
আসমান’ কথাটা ঠিক সাত বারই এসেছে । ‘খালকুস
সামাওয়াত’ – আসমান সমূহের সৃষ্টির কথাটাও সাত বার
এসেছে, সম্ভবত আসমান সাতটি তাই। ‘সাবয়াতু
আইয়াম’ মানে ৭ দিন । এ কথাটাও কোরআনে
সাতবার এসেছে। ‘সালাওয়াত’ শব্দটি সালাত এর
বহুবচন । কোরআনে সালাওয়াত শব্দটি ৫ বার
এসেছে, সম্ভবত ৫ বার নামাজ ফরজ হওয়ার কারণে
এটা এভাবে বলা হয়েছে।
কোরআনের অংকগত মোজেযা এখানেই শেষ
নয়।
‘দুনিয়া ও আখেরাত’ এ দুটি কথাও কোরআনে সমান
সংখ্যায় এসেছে, অর্থাৎ সর্বমোট ১১৫ বার
করে।
‘ঈমান ও কুফর’ শব্দ দু’টোও সমপরিমান বলা
হয়েছে, অর্থাৎ ২৫বার করে।
‘উপকার ও ক্ষতি’ সমভাবে এসেছে ৫০ বার করে।
ঠিক একইভাবে ‘শান্তি’ ও ‘অশান্তি’ শব্দটি এসেছে
১৩ বার করে।
‘গরম ও ঠান্ডা’ যেহেতু দুটো বিপরীতমুখী ঋতু
তাই এশব্দ দু’টো কোরআনে সমান সংখ্যক অর্থাৎ
৫ বার করে এসেছে। ‘সূর্য’ আলো দেয়
বলে দুটো শব্দই কোরআনে সমান সংখ্যায়
এসেছে, ৩৩ বার করে।
কাজ করলে কাজের পুরস্কার দেয়া হবে বলেই
সম্ভবত ‘কাজ করা’ ও ‘পুরস্কার’ শব্দটি এসেছে
১০৮ বার করে।
আরবী ভাষায় ‘কুল’ মানে ‘বলো’ তার জবাবে বলা
হয় ‘কালু’ মানে ‘তারা বললো’ । সমগ্র
কোরআনে এদুটো শব্দও সমান সংখ্যক, অর্থাৎ
৩৩২ বার করে এসেছ।
‘বক্তৃতা’ বা ‘ভাষণ’ ‘মুখ’ থেকে আসে তাই তাই
উভয় শব্দ এসেছে ২৫ বার করে।
আর রাসূল শব্দটি এসেছে ৫০ বার, আর যাদের
কাছে রাসুলদের পাঠানো হয়েছে সে মানুষের
কথাও এসেছে ৫০ বার। পুনরাবৃত্তিসহ কোরআনে
সব নবীদের নাম এসেছে ৫১৩ বার। বিস্ময়ের
ব্যাপার রসূল শব্দের মূল ধাতু অর্থাৎ ‘রেসালাহ’
শব্দটিও কোরাআনে ৫১৩ বার এসেছে।
জিহবা দিয়ে মানুষ বক্তৃতা দেয় বলে, ‘জিহবা’ ও
‘বক্তৃতা’ শব্দটি সমান সংখ্যক অর্থাৎ ৫০ বার করে
এসেছে।
মানুষ যখন জনগনের নিকট থাকে তখন স্বাভাবিক
ভাবেই তাকে একটু জোরে কথা কলতে হয়, তাই
কোরআনে ‘জোরে কথা বলা’ ও ‘জনগনের
সামনে’ এ উভয়টাই এসেছে ১৬ বার করে।
আলোর সাথে সম্পর্ক মানুষের মানুষের
মনের। মনে আলো জ্বললেই তা দিয়ে দুনিয়ায়
আলো ছড়ানো যায়। এ কারনেই সম্ভবত ‘মন’ ও
‘আলো’ শব্দ দুটি কোরআনে একই সংখ্যায়
এসেছে, মোট ৪৯ বার করে।
আল্লাহ তায়ালা ‘বিপদে’ ‘শোকর’ আদায় করতে
বলেছেন, তাই এই উভয় শব্দই এসেছে ৭৫ বার
করে।
আল্লাহর ‘রহমত’ হলে ‘হেদায়েত’ আসে তাই
এই শব্দ দুটো ও সমান সংখ্যায় এসেছে, ৭৯ বার
করে।
কোরআনে ‘খেয়ানত’ শব্দটি এসেছে ১৬ বার ,
আর যে খেয়ানত করে সে একজন ‘খবিস’ কিংবা
খারপ লোক , তাই এ শব্দটি ও এসেছে ১৬ বার।
‘মালাকুন’ কিংবা ‘মালায়েকা’ মানে ফেরেশতা কিংবা
ফেরেশতারা। কোরআনে এটি এসেছে ৮৮ বার
– একইভাবে ফেরেশতার চির শত্রু ‘শয়তান’ কিংবা
‘শায়াতীন’ এটি ও এসেছে ৮৮ বার।
আবার ‘আল খাবিস’ মানে অপবিত্র, ‘আত তাইয়েব’
মানে পবিত্র, সমগ্র কোরআনে এদুটি শব্দমোট
৭ বার করে , অর্থাৎ একই সংখ্যায় নাজিল হয়েছে।
প্রশ্ন জাগতে পারে দুনিয়ায় ভালোর চাইতে মন্দ
তো বেশি, এখানে দুটো শব্দ সমান রাখা হল
কিভাবে? এ কথার জবাবের জন্য কোরআনের
‘সূরা আনফালের ৩৭ নং আয়াতটির দিকে লক্ষ করা
যাক। এখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
‘অপবিত্রকে পবিত্র থেকে আলাদা করার জন্য তিনি
অপবিত্রকে একটার ওপর আরেকটা রেখে তাকে
পুঞ্জীভূত করেন এবং সেগুলোকে
জাহান্নামের আগুনে ফেলে দেনে।’ এত বুঝা
যায় , যদিও পাপ পুণ্য’ সমান সংখ্যায় এসেছে , কিন্তু ‘
পুঞ্জীভূত ’ করা দিয়ে তার পরিমাণ যে বেশি তা
বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘ইয়াওমুন’ মানে ‘দিন’ সমগ্র কোরআনে এ শব্দটি
৩৬৫ বার উল্লেখ করা হয়েছে। বছরে যে
৩৬৫দিন এটা কে না জানে। ইয়াওমুন শব্দের বহুবচন
‘আইয়াম’ মানে দিন সমূহ, এ শব্দটি এসেছে ৩০ বার।
আরবী ভাষায় চাঁদ হচ্ছে মাসের সূত্র সুচক, গড়ে
বছরের প্রতি মাসে ৩০ দিন , আর এটাই হচ্ছে
চন্দ্র বছরের নিয়ম। হতবাক হতে হয় যখন দেখি
, চাদের আরবী প্রতিশব্দ ‘কামার’ শব্দটি
কোরআনে মোট ৩০ বারই এসেছে। ‘শাহরুন’
মানে মাস, কোরআন মাজিদে এ শব্দটি এসেছে
মোট ১২ বার। ‘সানাতুন’ মানে বছর, কোরআনে
এ শব্দটি এসেছে ১৯ বার। কারণ হিসেবে আমরা
সম্প্রতি আবিস্কৃত গ্রীক পন্ডিত মেতনের
মেতনীয় বৃত্তের’ কথা উল্লেখ করতে পারি।
তিনিই প্রথমে এ তত্ব আবিস্কার করেন যে, প্রতি
১৯ বছর পর সূর্য ও পৃথিবী একই বৃত্তে অবস্থান
করে। কোরআনের আরেকটি বিষ্ময়কর শব্দ
হচ্ছে ‘রাত’ ও ‘রাতগুলো’ – এ উভয় সংখ্যা
কোরআনে এসেছে ‘সর্বমোট ৯২ বার , আর
কোরআনে ‘ আল লাইল’ অর্থাৎ রাত নামের সূরাটির
ক্রমিক সংখ্যাও হচ্ছে ৯২।
কোরআনে চাঁদ শব্দটি সর্বমোট ২৭ স্থানে
এসেছে। আশ্চয্যের বিষয় হচ্ছে , চাঁদ
পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষীন করতে সময়
লাগে ঠিক ২৭.০৩ দিন অর্থাৎ ২৭ দিন ৭ ঘন্টা ৪৩ মিনিট।
কোরআনে ‘ফুজ্জার’ পাপী শব্দটি যতবার
এসেছে, ‘আবরার’ পুণ্যবান শব্দটি তার দ্বিগুন
এসেছে। অর্থাৎ ‘ ফুজ্জার’ ৩ বার আর ‘আবরার’ ৬
বার। এর কারণ হচ্ছে , আল্লাহ তায়ালা সব সময় শাস্তির
তুলনায় পুরস্কারের পরিমান দ্বিগুণ কওে দেবেন
বলে ওয়াদা করেছেন।
কোরআনের সূরা সাবা’র ৩৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ
তায়ালা বলেছেন- এ ধবনের লোকদের জন্য
(কেয়ামতে) দ্বিগুন পুরস্কারের ব্যবস্থা থাববে।
এটা হচ্ছে বিনিময় সে কাজের যা তারা দুনিয়য় করে
এসেছে ’। এ কারণেই দেখা যায় , গোটা
কোরআনে ‘পাপী’ ও ‘পুণ্যবান’ শব্দের
মতো , ‘আযাব’ শব্দটি যতোবর এসেছে ‘সওয়াব’
শব্দটি তার দ্বিগুন এসেছে।
কোরআনে একাধিক জায়গায় আল্লাহ তায়ালা
বলেছেন – আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করলে
তিনি তার বিনিময় বাড়িয়ে দেবেন। সম্ভবত এ
কারণেই কোরআনে ‘গরীবী’ শব্দটি
এসেছে ১৩ বার, আর তার বিপরীতে ‘প্রচুর্য’
শব্দটি এসেছে ২৬ বার। কোরআনে স্থলভাগ
এসেছে ১৩ বার আর ‘জলভাগ’ এসেছে ৩২ বার।
উভয়টা মিলে সংখ্যা দাড়ায় ৪৫, আর এ সংখ্যাকে ১৩
দিয়ে ভাগ করলে দাঁড়ায় ২৯(২৮.৮৮৮৮৮৮৮৮৮৯%),
আবার ৩২ দিয়ে ভাগ করলে দাঁড়ায়
৭১(৭১.১১১১১১১১১১%), আর এটাই হচ্ছে এই
গ্রহের জল ও স্থল ভাগের সঠিক আনুপাতিক হার।
কোরআন কারীমের বিভিন্ন জায়গায় এভাবে
গাণিতিক সংখ্যার অদ্ভতু মিল দেখে যে কোনো
কোরআন পাঠকই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবতে
থাকে, এটা নিসন্দেহে কোন মানুষের কথা নয়।
কোন একটা কাজ করলে তার যে অবশ্যম্ভাবী
ফল দাঁড়াবে তার উভয়টিকে আশ্চর্যজনকভাবে সমান
সংখ্যায় বর্ণনা করা হয়েছে। ‘গাছের চারা’ উৎপাদন
করলে ‘গাছ’ হয়। তাই এ দুটো শব্দই এসেছে ২৬
বার করে।
কোন মানুষ ’হেদায়াত’ পেলে তার প্রতি ‘রহমত’
বর্ষিত হয় , তাই এ দুটো শব্দ কোরআনে
এসেছে ৭৯ বার করে। হেদায়াত; এর অপরিহার্য
পরিনাম হচ্ছে ‘মউত’ এ শব্দ দুটোও এসেছে
১৬ বার বরে।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন ‘যাকাত’ দিলে ‘বরকত’
আসে, তাই কোরআনে কারীমে‘ যাকাত’ শব্দ
এসেছে ৩২ বার ‘বরকত’ শব্দও এসেছে ৩২ বার।
‘আবদ’ মানে গোলামী করা, আর ‘আবীদ’
মানে গোলাম। গোলামের কাজ গোলামী করা ,
তাই কোরআনে এই উভয় শব্দই এসেছে ১৫২
বার করে।
মানুষ ’সৃষ্টি’ কথাটা এসেছে ১৬ বার, আর মানুষ
সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘এবাদত’ তাই এ শব্দটিও
এসেছে ১৬ বার।
‘নেশা’ করলে মাতাল হয় , তাই এ দুটো শব্দও
এসেছে ৬ বার করে। প্রতিটি ‘দুঃখ কষ্টে’
আল্লাহ তায়ালা মানুষের ধৈর্য ধরতে বলেছেন –
কোরআনে এই উভয় শব্দেই এসেছে ১০২ বার
করে।
‘উপকার’ ও ’ক্ষতি’ এসেছে ৫০ বার করে। আল্লাহ
তায়ালা আমাদের শয়তান থেকে আশ্রয় চাইতে
বলেছেন, সম্ভবত এই কারনে কোরআনে
যতোবার ‘শয়তানের’ নাম এসেছে ঠিক
ততোবারই ‘আশ্রয় চাওয়ার’ কথাও এসেছে,
অর্থাৎ উভয়টাই ১১ বার করে এসেছে।
আর মাত্র ৩ টি রহস্যের কথা বলে আমরা ভিন্ন
দিকে অগ্রসর হবো।
সূরা আল কাহফে গুহাবাসীরা কতোদিন সেখানে
অবস্থান করেছে সে ব্যাপারে কোরআন
মাজীদে বলেছে, ‘তারা তাদের (এ) গুহায়
কাটিয়েছে মোট ৩০০ বছর, তারা (এর সাথে)
যোগ করেছে আরো ৯ বছর’। প্রশ্ন হচ্ছে
এভাবে দু’ভাগে না বলে আল্লাহ তায়ালা সংখ্যাটা
একেত্রেও তো বলতে পারতেন। অর্থাৎ
এভাবেও বলা যেতো যে, ‘তারা সেখানে ৩০৯
বছর কাটিয়েছে’। কোরআনের এ আয়াত নাযিল
হওয়ার সময় কেউ সৌর গণনা ও চন্দ্র গণনার বিষয়টি
জানতো না। পরে দুনিয়ার মানুষেরা জেনেছে
যে, চন্দ্র মাস সৌর মাসের চাইতে ১১ দিন কম। প্রতি
বছরে ১১ দিনের এই তফাৎটা হিসাব করলে সময়টা
হবে ঠিক ৯ বছর। অপর কথায় গুহায় তাদের
অবস্থানের সময়টা সৌর গণনার হিসাবে হচ্ছে ৩০০
বছর, আর চন্দ্র মাস হিসেবে হবে ৩০৯ ।
কোরআন এই উভয় হিসাবটাই উৎসাহী পাঠকদের
সামনে সুন্দর করে বর্ণনা করেছে।
কোরআনে ‘ইনসান’ শব্দটি এসেছে ৬৫ বার।
এবার ইনসান বানাবার উপকরণগুলোকে
কোরআনের বিভিন্ন জায়গা থেকে যোগ করে
মিলিয়ে দেখা যাক। প্রথম উপাদান ‘তোরাব’ (মাটি)
শব্দটি এসেছে ১৭ বার, দ্বিতীয় উপাদান
‘নুতফা’ (জীবনকণা) শব্দ এসেছে ১২ বার,
তৃতীয় উপাদান ‘আলাক’ (রক্তপিন্ড) শব্দ
এসেছে ৬ বার, চতুর্থ উপাদান
‘মোগদা’ (মাংসপিন্ড) এসেছে ৩ বার। পঞ্চম
উপাদান হচ্ছে ‘লাহম’ (হাড়) , এটি এসেছে ১৫ বার।
সর্বশেষ উপাদান হচ্ছে ‘লাহম’ (গোশত) , এ
শব্দটি এসেছে ১২ বার। কোরআনে উল্লিখিত
(সূরা হজ্জ ৫)- এ উপাদানগুলো যোগ করলে
যোগফল হবে ঠিক ৬৫। আর এসব উপাদান দিয়ে
যে ‘ইনসান’ বানানো হয়েছে তাও কোরআনে
ঠিক ৬৫ বারই উল্লেখে করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা কোরআনের সূরা ‘আল ক্বামার’ – এর
প্রথম যে আয়াতটিতে চাঁদ বিদীর্ণ হওয়ার সাথে
কেয়ামতের আগমন অত্যাসন্ন কথাটি বলেছেন,
আরবী বর্ণমালার আক্ষরিক মান হিসাব করলে তার
যোগফল হয় ১৩৯০, আর এ ১৩৯০ হিজরী (১৯৬৯
খৃস্টাব্দ) সালেই মানুষ সর্বপ্রথম চাঁদে অবতরণ
করে, জানি না এটা কোরআনের কোন
মোজেযা, না তা এমনিই এক ঘটনাচক্র, কিন্তু
আল্ল্হ তায়ালার এ মহান সৃষ্টিতে তো ঘটনাচক্র
বলতে কিছুই নেই।
এ কারণেই হয়তো মানুষের চাঁদে অবতরণের
সালের সাথে কোরআনের আলোচ্য আয়াতটির
সংখ্যামানের এ বিস্ময়কর মিল আমরা দেখতে পাচ্ছি।
✯ ✯ ✯ কুরআনের গানিতিক বিস্ময় ✯ ✯ ✯
১। আরবীতে “বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” লিখতে ঠিক
১৯
টা হরফ লাগে ।
২। পবিত্র কুরআন শরীফে মোট
১১৪টি সূরা আছে । ১১৪
সংখ্যাটি ১৯
দিয়ে বিভাজ্য (১১৪=১৯x৬)।
৩। প্রথম যে সূরাটি (সূরা আলাক)
নাযিল হয় তার অবস্থান শেষের
দিক
থেকে ১৯ তম।
৪। প্রথম যে পাঁচটি আয়াত
(সূরা আলাকের) নাযিল হয়
তাতে ঠিক
১৯ টি শব্দ আছে।
৫। সূরা আলাকে মোট আয়াত
আছে ১৯টি।
আর এই ১৯ আয়াতে আছে মোট
২৮৫টি শব্দ
যা কিনা বিস্ময়করভাবে ১৯
দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায়
(২৮৫=১৯x১৫)।
৬। নাযিলকৃত দ্বিতীয় সূরাটির
(সূরা আল-কালাম, কুরআনে অবস্থান
৬৮তম) শব্দসংখ্যা ৩৮(১৯x২)টি।
৭। নাযিলকৃত তৃতীয় সূরাটির
(সূরা আল-
মুজাম্মিল, পবিত্র কুরআন
শরীফে অবস্থান ৭৩তম)
শব্দসংখ্যা ৫৭(১৯x৩)টি।
৮। আবার সব শেষে নাযিল
হওয়া ‘সূরা আন-নাসর’ এ আছে মোট
১৯টি শব্দ। আর এই সূরার প্রথম
আয়াতে (মহান আল্লাহ্ পাক উনার
কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে এই
আয়াতে) আছে ঠিক ১৯টি হরফ।
৯। পবিত্র কুরআন শরীফে ‘আল্লাহ্’
নাম
মুবারক উল্লেখ করা হয়েছে মোট
১৩৩
বার
যা কিনা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য
(১৩৩=১৯x৭)।
১০- পবিত্র কুরআন শরীফে মোট
তিরিশটি পূর্ণসংখ্যার উল্লেখ
আছে যাদের যোগফল ১৯
দিয়ে বিভাজ্য।
1 +2 +3 +4 +5 +6 +7 +8 +9 +10 +11 +
12 +19 +20 +30 +40 +50 +60 +70 +80
+
99 +100 +200 +300 +1000 +2000 +
3000
+5000 +50000 +100000 =162,146 (19
x
8534)
১১। আর দশমিক ভগ্নাংশ আছে মোট
৮টি 1/10, 1/8, 1/6, 1/5, 1/4, 1/3, 1/2
এবং 2/3. তাহলে পবিত্র কুরআন
শরীফে মোট ৩৮ টি সংখ্যার
উল্ল্যেখ
আছে (৩৮=১৯x২)।
১২। ১১৩টি সূরার
আগে “বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম” আছে । শুধুমাত্র সূরা আত-
তাওবা এর আগে “বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” নেই । আর
সূরা আন-
নামল এর
আগে আছে “বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” দুইবার
তাহলে কুরআনে “বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” আছে মোট
১১৪(১৯
x৬) বার। সূরা আত- তাওবা কে প্রথম
ধরে যদি গুনে গুনে পরবর্তী সূরার
দিকে যেতে থাকেন
তবে সূরা আন-নামল
পাবেন ঠিক ১৯তম স্থানে! আরও একটু
অবাক হওয়া যাক, ১৯ এর গুনিতক-তম
সূরার আয়াতগুলির
(“বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম” সহ) যোগফলও ১৯
এর গুনিতক মানে ১৯
দিয়ে বিভাজ্য!
পবিত্র কুরআন শরীফে সূরার অবস্থান
আয়াত সংখ্যা
১৯x১= ১৯তম সূরা ৯৯
১৯x২= ৩৮তম সূরা ৮৯
১৯x৩= ৫৭তম সূরা ৩০
১৯x৪= ৭৬তম সূরা ৩২
১৯x৫= ৯৫তম সূরা ৯
১৯x৬= ১১৪তম সূরা ৭
=২৬৬(১৯x৪)
১৩। প্রথম দিক থেকে হিসেব
করে যেতে থাকলে ১৯ আয়াত
সম্বলিত
প্রথম সূরা হচ্ছে সূরা আল- ইনফিতার।
এই সুরাটির শেষ শব্দ হল ‘আল্লাহ্’।
আপনি যদি শেষের দিক
হতে আল্লাহ্
শব্দটি গুনে গুনে আসতে থাকেন
তাহলে সূরা আল-ইনফিতারের
শেষের
‘আল্লাহ্’ শব্দের অবস্থান হবে একদম
ঠিক ১৯তম স্থানে!
১৪। ৫০ এবং ৪২তম সূরার প্রত্যেকেই
শুরু হয়েছে কাফ দিয়ে। অবাক হবেন
সূরা দুটির প্রত্যেকটিতে মোট
কাফের
সংখ্যা(৫৭=১৯ x৩) সমান। আবার ৫০তম
সূরায় আয়াত আছে ৪৫টি, যোগ করুন
৫০+৪৫= ৯৫(১৯ x৫)। একইভাবে ৪২তম
সূরায় আয়াত আছে ৫৩টি, ৪২+৫৩=
৯৫(১৯ x৫)।
৫০তম সূরা ৫৭(১৯ x৩) বার কাফ ৪২তম
সূরা ৫৭(১৯ x৩) বার কাফ ৫০তম
সূরা ৪৫টি আয়াত ৫০+৪৫= ৯৫(১৯ x৫)
৪২তম সূরা ৫৩টি আয়াত ৪২+৫৩= ৯৫(১৯
x৫) আবার পুরো কুরআন শরীফে কাফ
হরফটি আছে মোট ৭৯৮ বার
যা কিনা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য
এবং ভাগফল হয় ৪২ – আর দেখতেই
পেয়েছি যে ৪২ তম সুরাটি শুরুও
হয়েছে কাফ দিয়ে । শুধু কাফ
না ‘নুন’
হরফটির ক্ষেত্রেও এরকম বেপার
আছে।
যেমন নুন দিয়ে যে সূরাটি শুরু
হয়েছে তাতে নুনের মোট
সংখ্যাও(১৩৩)
১৯ দিয়ে বিভাজ্য (১৩৩= ১৯x৭)।
সূরা আত-তাওবা কে প্রথম
ধরে যদি গুনে গুনে পরবর্তী সূরার
দিকে যেতে থাকেন
তবে সূরা আন-নামল
পাবেন ঠিক ১৯তম স্থানে! পবিত্র
কুরআন শরীফে সূরা আল-
মুদ্দাসিরের ৩০
নম্বর আয়াতে চ্যালেঞ্জ
করে বলা আছে “There are nineteen in
charge of it.” (Qur’an, 74:30) ।
অর্থাৎ ১৯ সংখ্যাটি এর
দায়িত্তে আছে। অর্থাৎ কেউ
ইচ্ছা করলেই কুরআনকে বিকৃত
করতে পারবে না। ১৯ এর বেপার
গুলো হিসেব করলেই সব বের
হয়ে আসবে এটাকে কেউ বিকৃত
করেছে কিনা!
যারা কোরআন নিয়ে সন্দেহ
প্রকাশ
করে তাদের জন্য এই তথ্যই যথেষ্ট
যা বুঝার বুঝে নেওয়ার।
ইনশাআল্লাহ মহাশক্তিধর আল্লাহ্
পাক
তিনি নিজেই যে এর রক্ষক, কেউ
চাইলেই সেটার মর্যাদা বিনষ্ট
করতে পারবে না।
কোরআনে অনেক জায়গায়ই একের সংগে
অন্যের তুলনা উপস্থিত করা হয়েছে। এ তুলনা
উপস্থিত করার ব্যাপারে একটি অবিশ্বাস্য মিল লক্ষ্য
করা গেছে এবং তা হচ্ছে – সে দুটি নাম অথবা
বস্তুকে আল্লাহ তায়ালা তার কিতাবে সমান সংখ্যাতেই
উল্লেখ করেছেন। যেমন কোরআন
শরীফে সূরা ‘আলে ইমরান’ – এর ৫৯ নম্বর
আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন , ‘আল্লাহ তায়ালার
কাছে ঈসার তুলনা হচ্ছে আদমের মতো।’
এটা যে সত্য তা আমরা বুঝতে পারি । কারণ, এদের
কারোরই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জন্ম হয়নি। আদম (আ.)
এর মাতাও ছিলো না, পিতাও ছিলো না এবং ঈসা (আ.)
এর ও পিতা ছিলোনা। এখন এই তুলনাটি যে কত সত্য
তার প্রমান পাওয়া যায় যখন আমরা কোরআন
শরীফে এ দুটি নামের মোট সংখ্যা অনুসন্ধান করি।
দেখা যাচ্ছে, কোরআন শরীফে ঈসা (আ.) এর
নামটি যেমন পঁচিশ বার এসেছে , তেমনি আদম
(আ.) এর নামটিও এসেছে পঁচিশ বার।
কোরআনের বাণীগুলো যে মানুষের নয় তা
বোঝা যায় এদুটি নামের সংখ্যার সমতা দেখে।
আল্লাহ তায়ালা যেহেতু বলেছেন , এ দুটো
একই রকম। তাই সেগুলোর সংখ্যা গণনাও ঠিক একই
রকম রাখা হয়েছে।
এ তুলনার ক্ষেত্রে আরেকটি অলৌকিক বিষয়
হলো, যেখানে তুলনাটি অসম সেখানে সংখ্যা
দুটিকেও অসম রাখা হয়েছে। যেমন,
কোরআনে বলা হয়েছে , ‘সুদ’ এবং ‘বাণিজ্য’
এক নয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ শব্দ দুটির একটি
কোরআনে এসেছে ছয় বার এবং অন্যটি
এসেছে সাত বার।
বলা হয়েছে , জান্নাতের অধিবাসী আর
জাহান্নামের অধিবাসী সমান নয়’। জান্নাতের সংখ্যা
হচ্ছে আট আর জাহান্নামের সংখ্যা হচ্চে সাত। কিন্তু
‘জান্নাত’ ও ’জাহান্নাম’ শব্দ দুটো কিন্ত একই রকম
এসেছে, মোট ৭৭ বার করে ।
ঠিক তেমনি ভাবে ‘কাজ’ এর পরিনাম হচ্ছে ‘বিনিময়’ ,
তাই দুটো শব্দ এসেছে ১০৭ বার করে ।
কাউকে ভালোবাসলে তার আনুগত্য করা যায়, তাই
এ দুটো শব্দও কোরআনে সমান সংখ্যক অর্থাৎ
৮৩ বার করে উল্লেখ করা হয়েছে।
‘নারী ও পুরুষ’ – যে আল্লাহ তায়ালার কাছে সমান তা
কোরআনে এই শব্দ দুটোর সমান সংখ্যা
থেকেই আমরা বুঝতে পারি। কোরআনে এ
দুটো শব্দ এসেছে ২৪ বার করে । আরেকটি
অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, নর নারীর সম্মিলিত ‘এগ’ ও
‘স্পারম’ দিয়ে মানব শিশুর যে ক্রোমোজম তৈরী
হয় সে বিষয়টি, এর মোট সংখ্যা ৪৬। (২৩ নারী আর
২৩ নর মিলে এর সংখ্যা হয় ৪৬)
সূরা ‘আরাফ’- এ, এক আয়াতে আছে ‘যারা আমার
স্পষ্ট আয়াত সমূহ অস্বীকার করে তাদের উদাহরণ
হচ্ছে কুকুরের মত’। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে
যেতে হয় যখন আমরা দেখি , ‘যারা আমার সুস্পষ্ট
আয়াতকে অস্বীকার করে’ এ বাক্যটি
কোরআনে সর্বমোট পাঁচবার এসেছে ।
যেহেতু তাদের উদাহরণ দেয়া হয়েছে
কুকুরের সাথে , তাই সমগ্র কোরআনে ‘আল
কালব’ তথা কুকুর শব্দটাও এসেছে পাঁচবার ।
‘সাবয়া সামাওয়াত’ কথটির অর্থ হলো ‘সাত আসমান’ ।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোরআনে এ ‘সাত
আসমান’ কথাটা ঠিক সাত বারই এসেছে । ‘খালকুস
সামাওয়াত’ – আসমান সমূহের সৃষ্টির কথাটাও সাত বার
এসেছে, সম্ভবত আসমান সাতটি তাই। ‘সাবয়াতু
আইয়াম’ মানে ৭ দিন । এ কথাটাও কোরআনে
সাতবার এসেছে। ‘সালাওয়াত’ শব্দটি সালাত এর
বহুবচন । কোরআনে সালাওয়াত শব্দটি ৫ বার
এসেছে, সম্ভবত ৫ বার নামাজ ফরজ হওয়ার কারণে
এটা এভাবে বলা হয়েছে।
কোরআনের অংকগত মোজেযা এখানেই শেষ
নয়।
‘দুনিয়া ও আখেরাত’ এ দুটি কথাও কোরআনে সমান
সংখ্যায় এসেছে, অর্থাৎ সর্বমোট ১১৫ বার
করে।
‘ঈমান ও কুফর’ শব্দ দু’টোও সমপরিমান বলা
হয়েছে, অর্থাৎ ২৫বার করে।
‘উপকার ও ক্ষতি’ সমভাবে এসেছে ৫০ বার করে।
ঠিক একইভাবে ‘শান্তি’ ও ‘অশান্তি’ শব্দটি এসেছে
১৩ বার করে।
‘গরম ও ঠান্ডা’ যেহেতু দুটো বিপরীতমুখী ঋতু
তাই এশব্দ দু’টো কোরআনে সমান সংখ্যক অর্থাৎ
৫ বার করে এসেছে। ‘সূর্য’ আলো দেয়
বলে দুটো শব্দই কোরআনে সমান সংখ্যায়
এসেছে, ৩৩ বার করে।
কাজ করলে কাজের পুরস্কার দেয়া হবে বলেই
সম্ভবত ‘কাজ করা’ ও ‘পুরস্কার’ শব্দটি এসেছে
১০৮ বার করে।
আরবী ভাষায় ‘কুল’ মানে ‘বলো’ তার জবাবে বলা
হয় ‘কালু’ মানে ‘তারা বললো’ । সমগ্র
কোরআনে এদুটো শব্দও সমান সংখ্যক, অর্থাৎ
৩৩২ বার করে এসেছ।
‘বক্তৃতা’ বা ‘ভাষণ’ ‘মুখ’ থেকে আসে তাই তাই
উভয় শব্দ এসেছে ২৫ বার করে।
আর রাসূল শব্দটি এসেছে ৫০ বার, আর যাদের
কাছে রাসুলদের পাঠানো হয়েছে সে মানুষের
কথাও এসেছে ৫০ বার। পুনরাবৃত্তিসহ কোরআনে
সব নবীদের নাম এসেছে ৫১৩ বার। বিস্ময়ের
ব্যাপার রসূল শব্দের মূল ধাতু অর্থাৎ ‘রেসালাহ’
শব্দটিও কোরাআনে ৫১৩ বার এসেছে।
জিহবা দিয়ে মানুষ বক্তৃতা দেয় বলে, ‘জিহবা’ ও
‘বক্তৃতা’ শব্দটি সমান সংখ্যক অর্থাৎ ৫০ বার করে
এসেছে।
মানুষ যখন জনগনের নিকট থাকে তখন স্বাভাবিক
ভাবেই তাকে একটু জোরে কথা কলতে হয়, তাই
কোরআনে ‘জোরে কথা বলা’ ও ‘জনগনের
সামনে’ এ উভয়টাই এসেছে ১৬ বার করে।
আলোর সাথে সম্পর্ক মানুষের মানুষের
মনের। মনে আলো জ্বললেই তা দিয়ে দুনিয়ায়
আলো ছড়ানো যায়। এ কারনেই সম্ভবত ‘মন’ ও
‘আলো’ শব্দ দুটি কোরআনে একই সংখ্যায়
এসেছে, মোট ৪৯ বার করে।
আল্লাহ তায়ালা ‘বিপদে’ ‘শোকর’ আদায় করতে
বলেছেন, তাই এই উভয় শব্দই এসেছে ৭৫ বার
করে।
আল্লাহর ‘রহমত’ হলে ‘হেদায়েত’ আসে তাই
এই শব্দ দুটো ও সমান সংখ্যায় এসেছে, ৭৯ বার
করে।
কোরআনে ‘খেয়ানত’ শব্দটি এসেছে ১৬ বার ,
আর যে খেয়ানত করে সে একজন ‘খবিস’ কিংবা
খারপ লোক , তাই এ শব্দটি ও এসেছে ১৬ বার।
‘মালাকুন’ কিংবা ‘মালায়েকা’ মানে ফেরেশতা কিংবা
ফেরেশতারা। কোরআনে এটি এসেছে ৮৮ বার
– একইভাবে ফেরেশতার চির শত্রু ‘শয়তান’ কিংবা
‘শায়াতীন’ এটি ও এসেছে ৮৮ বার।
আবার ‘আল খাবিস’ মানে অপবিত্র, ‘আত তাইয়েব’
মানে পবিত্র, সমগ্র কোরআনে এদুটি শব্দমোট
৭ বার করে , অর্থাৎ একই সংখ্যায় নাজিল হয়েছে।
প্রশ্ন জাগতে পারে দুনিয়ায় ভালোর চাইতে মন্দ
তো বেশি, এখানে দুটো শব্দ সমান রাখা হল
কিভাবে? এ কথার জবাবের জন্য কোরআনের
‘সূরা আনফালের ৩৭ নং আয়াতটির দিকে লক্ষ করা
যাক। এখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
‘অপবিত্রকে পবিত্র থেকে আলাদা করার জন্য তিনি
অপবিত্রকে একটার ওপর আরেকটা রেখে তাকে
পুঞ্জীভূত করেন এবং সেগুলোকে
জাহান্নামের আগুনে ফেলে দেনে।’ এত বুঝা
যায় , যদিও পাপ পুণ্য’ সমান সংখ্যায় এসেছে , কিন্তু ‘
পুঞ্জীভূত ’ করা দিয়ে তার পরিমাণ যে বেশি তা
বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
‘ইয়াওমুন’ মানে ‘দিন’ সমগ্র কোরআনে এ শব্দটি
৩৬৫ বার উল্লেখ করা হয়েছে। বছরে যে
৩৬৫দিন এটা কে না জানে। ইয়াওমুন শব্দের বহুবচন
‘আইয়াম’ মানে দিন সমূহ, এ শব্দটি এসেছে ৩০ বার।
আরবী ভাষায় চাঁদ হচ্ছে মাসের সূত্র সুচক, গড়ে
বছরের প্রতি মাসে ৩০ দিন , আর এটাই হচ্ছে
চন্দ্র বছরের নিয়ম। হতবাক হতে হয় যখন দেখি
, চাদের আরবী প্রতিশব্দ ‘কামার’ শব্দটি
কোরআনে মোট ৩০ বারই এসেছে। ‘শাহরুন’
মানে মাস, কোরআন মাজিদে এ শব্দটি এসেছে
মোট ১২ বার। ‘সানাতুন’ মানে বছর, কোরআনে
এ শব্দটি এসেছে ১৯ বার। কারণ হিসেবে আমরা
সম্প্রতি আবিস্কৃত গ্রীক পন্ডিত মেতনের
মেতনীয় বৃত্তের’ কথা উল্লেখ করতে পারি।
তিনিই প্রথমে এ তত্ব আবিস্কার করেন যে, প্রতি
১৯ বছর পর সূর্য ও পৃথিবী একই বৃত্তে অবস্থান
করে। কোরআনের আরেকটি বিষ্ময়কর শব্দ
হচ্ছে ‘রাত’ ও ‘রাতগুলো’ – এ উভয় সংখ্যা
কোরআনে এসেছে ‘সর্বমোট ৯২ বার , আর
কোরআনে ‘ আল লাইল’ অর্থাৎ রাত নামের সূরাটির
ক্রমিক সংখ্যাও হচ্ছে ৯২।
কোরআনে চাঁদ শব্দটি সর্বমোট ২৭ স্থানে
এসেছে। আশ্চয্যের বিষয় হচ্ছে , চাঁদ
পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষীন করতে সময়
লাগে ঠিক ২৭.০৩ দিন অর্থাৎ ২৭ দিন ৭ ঘন্টা ৪৩ মিনিট।
কোরআনে ‘ফুজ্জার’ পাপী শব্দটি যতবার
এসেছে, ‘আবরার’ পুণ্যবান শব্দটি তার দ্বিগুন
এসেছে। অর্থাৎ ‘ ফুজ্জার’ ৩ বার আর ‘আবরার’ ৬
বার। এর কারণ হচ্ছে , আল্লাহ তায়ালা সব সময় শাস্তির
তুলনায় পুরস্কারের পরিমান দ্বিগুণ কওে দেবেন
বলে ওয়াদা করেছেন।
কোরআনের সূরা সাবা’র ৩৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ
তায়ালা বলেছেন- এ ধবনের লোকদের জন্য
(কেয়ামতে) দ্বিগুন পুরস্কারের ব্যবস্থা থাববে।
এটা হচ্ছে বিনিময় সে কাজের যা তারা দুনিয়য় করে
এসেছে ’। এ কারণেই দেখা যায় , গোটা
কোরআনে ‘পাপী’ ও ‘পুণ্যবান’ শব্দের
মতো , ‘আযাব’ শব্দটি যতোবর এসেছে ‘সওয়াব’
শব্দটি তার দ্বিগুন এসেছে।
কোরআনে একাধিক জায়গায় আল্লাহ তায়ালা
বলেছেন – আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করলে
তিনি তার বিনিময় বাড়িয়ে দেবেন। সম্ভবত এ
কারণেই কোরআনে ‘গরীবী’ শব্দটি
এসেছে ১৩ বার, আর তার বিপরীতে ‘প্রচুর্য’
শব্দটি এসেছে ২৬ বার। কোরআনে স্থলভাগ
এসেছে ১৩ বার আর ‘জলভাগ’ এসেছে ৩২ বার।
উভয়টা মিলে সংখ্যা দাড়ায় ৪৫, আর এ সংখ্যাকে ১৩
দিয়ে ভাগ করলে দাঁড়ায় ২৯(২৮.৮৮৮৮৮৮৮৮৮৯%),
আবার ৩২ দিয়ে ভাগ করলে দাঁড়ায়
৭১(৭১.১১১১১১১১১১%), আর এটাই হচ্ছে এই
গ্রহের জল ও স্থল ভাগের সঠিক আনুপাতিক হার।
কোরআন কারীমের বিভিন্ন জায়গায় এভাবে
গাণিতিক সংখ্যার অদ্ভতু মিল দেখে যে কোনো
কোরআন পাঠকই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবতে
থাকে, এটা নিসন্দেহে কোন মানুষের কথা নয়।
কোন একটা কাজ করলে তার যে অবশ্যম্ভাবী
ফল দাঁড়াবে তার উভয়টিকে আশ্চর্যজনকভাবে সমান
সংখ্যায় বর্ণনা করা হয়েছে। ‘গাছের চারা’ উৎপাদন
করলে ‘গাছ’ হয়। তাই এ দুটো শব্দই এসেছে ২৬
বার করে।
কোন মানুষ ’হেদায়াত’ পেলে তার প্রতি ‘রহমত’
বর্ষিত হয় , তাই এ দুটো শব্দ কোরআনে
এসেছে ৭৯ বার করে। হেদায়াত; এর অপরিহার্য
পরিনাম হচ্ছে ‘মউত’ এ শব্দ দুটোও এসেছে
১৬ বার বরে।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন ‘যাকাত’ দিলে ‘বরকত’
আসে, তাই কোরআনে কারীমে‘ যাকাত’ শব্দ
এসেছে ৩২ বার ‘বরকত’ শব্দও এসেছে ৩২ বার।
‘আবদ’ মানে গোলামী করা, আর ‘আবীদ’
মানে গোলাম। গোলামের কাজ গোলামী করা ,
তাই কোরআনে এই উভয় শব্দই এসেছে ১৫২
বার করে।
মানুষ ’সৃষ্টি’ কথাটা এসেছে ১৬ বার, আর মানুষ
সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘এবাদত’ তাই এ শব্দটিও
এসেছে ১৬ বার।
‘নেশা’ করলে মাতাল হয় , তাই এ দুটো শব্দও
এসেছে ৬ বার করে। প্রতিটি ‘দুঃখ কষ্টে’
আল্লাহ তায়ালা মানুষের ধৈর্য ধরতে বলেছেন –
কোরআনে এই উভয় শব্দেই এসেছে ১০২ বার
করে।
‘উপকার’ ও ’ক্ষতি’ এসেছে ৫০ বার করে। আল্লাহ
তায়ালা আমাদের শয়তান থেকে আশ্রয় চাইতে
বলেছেন, সম্ভবত এই কারনে কোরআনে
যতোবার ‘শয়তানের’ নাম এসেছে ঠিক
ততোবারই ‘আশ্রয় চাওয়ার’ কথাও এসেছে,
অর্থাৎ উভয়টাই ১১ বার করে এসেছে।
আর মাত্র ৩ টি রহস্যের কথা বলে আমরা ভিন্ন
দিকে অগ্রসর হবো।
সূরা আল কাহফে গুহাবাসীরা কতোদিন সেখানে
অবস্থান করেছে সে ব্যাপারে কোরআন
মাজীদে বলেছে, ‘তারা তাদের (এ) গুহায়
কাটিয়েছে মোট ৩০০ বছর, তারা (এর সাথে)
যোগ করেছে আরো ৯ বছর’। প্রশ্ন হচ্ছে
এভাবে দু’ভাগে না বলে আল্লাহ তায়ালা সংখ্যাটা
একেত্রেও তো বলতে পারতেন। অর্থাৎ
এভাবেও বলা যেতো যে, ‘তারা সেখানে ৩০৯
বছর কাটিয়েছে’। কোরআনের এ আয়াত নাযিল
হওয়ার সময় কেউ সৌর গণনা ও চন্দ্র গণনার বিষয়টি
জানতো না। পরে দুনিয়ার মানুষেরা জেনেছে
যে, চন্দ্র মাস সৌর মাসের চাইতে ১১ দিন কম। প্রতি
বছরে ১১ দিনের এই তফাৎটা হিসাব করলে সময়টা
হবে ঠিক ৯ বছর। অপর কথায় গুহায় তাদের
অবস্থানের সময়টা সৌর গণনার হিসাবে হচ্ছে ৩০০
বছর, আর চন্দ্র মাস হিসেবে হবে ৩০৯ ।
কোরআন এই উভয় হিসাবটাই উৎসাহী পাঠকদের
সামনে সুন্দর করে বর্ণনা করেছে।
কোরআনে ‘ইনসান’ শব্দটি এসেছে ৬৫ বার।
এবার ইনসান বানাবার উপকরণগুলোকে
কোরআনের বিভিন্ন জায়গা থেকে যোগ করে
মিলিয়ে দেখা যাক। প্রথম উপাদান ‘তোরাব’ (মাটি)
শব্দটি এসেছে ১৭ বার, দ্বিতীয় উপাদান
‘নুতফা’ (জীবনকণা) শব্দ এসেছে ১২ বার,
তৃতীয় উপাদান ‘আলাক’ (রক্তপিন্ড) শব্দ
এসেছে ৬ বার, চতুর্থ উপাদান
‘মোগদা’ (মাংসপিন্ড) এসেছে ৩ বার। পঞ্চম
উপাদান হচ্ছে ‘লাহম’ (হাড়) , এটি এসেছে ১৫ বার।
সর্বশেষ উপাদান হচ্ছে ‘লাহম’ (গোশত) , এ
শব্দটি এসেছে ১২ বার। কোরআনে উল্লিখিত
(সূরা হজ্জ ৫)- এ উপাদানগুলো যোগ করলে
যোগফল হবে ঠিক ৬৫। আর এসব উপাদান দিয়ে
যে ‘ইনসান’ বানানো হয়েছে তাও কোরআনে
ঠিক ৬৫ বারই উল্লেখে করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা কোরআনের সূরা ‘আল ক্বামার’ – এর
প্রথম যে আয়াতটিতে চাঁদ বিদীর্ণ হওয়ার সাথে
কেয়ামতের আগমন অত্যাসন্ন কথাটি বলেছেন,
আরবী বর্ণমালার আক্ষরিক মান হিসাব করলে তার
যোগফল হয় ১৩৯০, আর এ ১৩৯০ হিজরী (১৯৬৯
খৃস্টাব্দ) সালেই মানুষ সর্বপ্রথম চাঁদে অবতরণ
করে, জানি না এটা কোরআনের কোন
মোজেযা, না তা এমনিই এক ঘটনাচক্র, কিন্তু
আল্ল্হ তায়ালার এ মহান সৃষ্টিতে তো ঘটনাচক্র
বলতে কিছুই নেই।
এ কারণেই হয়তো মানুষের চাঁদে অবতরণের
সালের সাথে কোরআনের আলোচ্য আয়াতটির
সংখ্যামানের এ বিস্ময়কর মিল আমরা দেখতে পাচ্ছি।